পঞ্চায়েত সদস‍্যের শিশু পুত্রকে অপহরণ করে মুক্তিপণ এর দাবী : অবশেষে মৃতদেহ উদ্ধার শিশুর

18th September 2020 10:15 am বর্ধমান
পঞ্চায়েত সদস‍্যের শিশু পুত্রকে অপহরণ করে মুক্তিপণ এর দাবী : অবশেষে মৃতদেহ উদ্ধার শিশুর


নিজস্ব সংবাদদাতা ( বর্ধমান ) : শিশু কে অপহরণ করে দুষ্কৃতীরা সাত লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করল শিশুর বাবার কাছে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার সাঁকো এলাকায়। বুধবার রাতে শিশুটির বাবাকে ফোন করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। বেশ কয়েকবার ফোন করা হয় টাকার জন্য বলে জানিয়েছেন শিশুটির পিতা বুদ্ধদেব দলুই। চরম আশঙ্কা আর আতঙ্কে গলসি থানায় এবিষয়ে অভিযোগ জানানোর পর গলসি থানার পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে তদন্তে নেমে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। বাকি গোটা ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে জেলা পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় তীব্র আলোড়ন পড়েছে এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, সাঁকো মেটে পাড়ার বাসিন্দা বুদ্ধদেব দলুই-এর ৯ বছরের ছেলে সন্দীপকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বুধবার মনসা পুজো উপলক্ষ্যে সাঁকো গ্রামে উৎসব চলছিল। পরিবারের দাবি, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বুদ্ধদেববাবুর মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণের দাবি করা হয়।জানানো হয়,  বুদ্ধদেব বাবুর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। ছাড়াতে ৭ লক্ষ টাকা লাগবে। আর ফোন পেয়ে এরপরই স্বাভাবিকভাবে আতঙ্কিত হয়ে উঠেন বুদ্ধদেববাবু ও তাঁর স্ত্রী সাত্ত্বনা। শুরু হয় খোঁজখুজি। কিন্তু পাড়ার কোথাও ছেলের সন্ধান পায়নি পরিজনেরা।সাঁকো গ্রামের মেটে পাড়ার মনসা মন্দির থেকে ৫০ মিটার দূরে বুদ্ধদেববাবুর নিজের বাড়ি। বুদ্ধদেব বাবু পেশায় ক্ষেত মজুর। পাশাপাশি তিনি গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা বর্তমানে সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। বুদ্ধদেববাবু জানান, পাড়ার পুজো উপলক্ষ্যে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। ছেলেরা সব মনসাতলাতে ছিল। এমন সময় এক অজানা  নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। বলা হয়, তাঁর ছেলে তদের কব্জায় রয়েছে। ছেলেকে পেতে হলে সাত লক্ষ টাকা দিতে হবে। আর এরপরই তিনি ও পাড়া প্রতিবেশী খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু ছেলের সন্ধান পাননি দলুই দম্পত্তি।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অপহরণের মামলা দায়ের হয়েছে। যে মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছিল সেই নম্বর ধরেই তদন্ত চলছে। রাত সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত পাঁচ বার ফোন করা হয়েছে বুদ্ধদেব বাবুর ফোনে। প্রথমে মুক্তিপণ সাত লক্ষ টাকা চাওয়া হলেও পরে ৩ লাখ টাকা দাবি করা হয়। বুদ্ধদেববাবুর স্ত্রী সাত্ত্বনাদেবী জানান, অপহরণকারীদের ফোনেই হাতে পায়ে ধরাধরি করে ছেলেকে ফিরিয়ে দেবার কাতর আবেদন জানানো হয়। তাদের এও বলা হয়, তাঁদের এতো টাকা নেই। সব সম্পত্তি বেচে দিলেও এক লাখ হবে না। টাকা দেবো কোথা থেকে। আর এরপর রাতেই মনসা পুজোর সব অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পাড়া প্রতিবেশিরা। তবুও কোথাও ছেলের হদিস পায়নি বুদ্ধদেব বাবু ও গ্রামের মানুষ। পুলিশের সমস্ত চেষ্টা কে বিফল করে শেষমেষ শুত্রুবার সাতসকালে ক্যানেলের জল থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হল অপহরণ হয়ে যাওয়া গলসি থানা এলাকার সাঁকো গ্রামের ৯ বছরের সন্দীপ দলুইয়ের নিথর দেহ।  নৃশংস আর পৈশাচিক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ সন্দীপের পরিবার থেকে গোটা গ্রাম। অপহরণ ও খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে গলসি থানার পুলিশ স্থানীয় সাঁকো মেটেপাড়া এলাকার তিনজন কে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম সুব্রত মাঝি(২০) ওরফে বাদশা, বাড়ি সাঁকো ডোম পাড়া। দ্বিতীয় জনের নাম জয়ন্ত বাগ(২০) ওরফে নিরঞ্জন, বাড়ি মেটেপাড়া। তৃতীয় জনের নাম মঙ্গলদীপ দলুই(১৮) ওরফে বাবু, বাড়ি সাঁকোর মেটেপাড়া। এরপর ই  উত্তেজিত জনতা ধৃতদের বাড়ি ভাঙচুর শুরু করে । একের পর এক বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় । সমস্ত জিনিসপত্র ভেঙে তছনছ করে দেয় উত্তেজিত জনতা । আগুন ও ধরিয়ে দেওয়া হয় । পুলিশ থাকলেও জনতার রোষ সামাল দেওয়া যায় নি । গোটা এলাকা অগ্নিগর্ভ । দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবীতে সোচ্চার এলাকাবাসী । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।